ইয়াজুজ -মাজুজ: কোন প্রাচীরের আড়ালে বন্দী? এক রহস্যময় কাহিনী।

ইয়াজুজ -মাজুজ: কোন প্রাচীরের আড়ালে বন্দী? এক রহস্যময় কাহিনী

কখনো ভেবেছেন, এই বিশাল পৃথিবীর কোথাও এমন এক জাতি লুকিয়ে আছে, যারা একদিন বেরিয়ে এসে পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেবে? আজ থেকে হাজার বছর আগে তাদেরকে এমন এক প্রাচীরের আড়ালে বন্দী করা হয়েছিল, যেখান থেকে তারা আজও বের হতে পারেনি। প্রশ্ন জাগে—এই প্রাচীর কোথায়? কিভাবে বানানো হয়েছিল? আর এর ভেতর লুকিয়ে আছে আমাদের জন্য কী শিক্ষার বার্তা?



ইয়াজুজ-মাজুজ কারা?

ইয়াজুজ-মাজুজ এমন এক জাতি যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। তারা সংখ্যায় হবে অসংখ্য, শক্তিশালী এবং ধ্বংসাত্মক। যদি তারা পৃথিবীতে বের হয়ে আসে, তবে মানুষ, সম্পদ, প্রকৃতি—কিছুই আর নিরাপদ থাকবে না।

কে বানিয়েছিলেন প্রাচীর?

কুরআনে বলা আছে, আল্লাহর একজন বান্দা—যুলকারনাইন—মানুষকে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে বিশাল এক প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন। তিনি লোহার পাত ও গলিত তামা দিয়ে পাহাড়ের মাঝখানে এই প্রাচীর তৈরি করেন। সেই প্রাচীর এত শক্তিশালী ছিল যে, ইয়াজুজ-মাজুজরা হাজার বছর চেষ্টা করেও সেটি ভেদ করতে পারেনি।


রহস্যময় প্রাচীর কোথায়?

অনেক গবেষক বলেন, এটি সম্ভবত মধ্য এশিয়ার কোনো অঞ্চলে। কেউ বলেন ককেশাস পর্বতের কাছে। আবার কেউ মনে করেন সাইবেরিয়ার কোনো অজানা উপত্যকায়। তবে সত্যিকার অর্থে এর সঠিক অবস্থান কেবল আল্লাহই জানেন।


আজকের জন্য শিক্ষণীয় দিক

বন্ধু, এই কাহিনী শুধু ইতিহাস নয়—এতে লুকিয়ে আছে বিশাল শিক্ষা।

  1. প্রতিটি বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহ ব্যবস্থা করেন – যেমন যুলকারনাইনকে পাঠিয়ে প্রাচীর বানানো হয়েছিল।
  2. শক্তি আর জ্ঞান যখন আল্লাহর পথে ব্যবহার হয়, তখন মানবজাতি উপকৃত হয়।
  3. দুনিয়ার ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু ঈমান আর নেক আমল চিরস্থায়ী।

মোটিভেশনাল বার্তা

আমাদের জীবনে ইয়াজুজ-মাজুজ হয়তো এখনো বের হয়নি, কিন্তু আমাদের ভেতরে থাকা "লোভ, হিংসা, গিবত, গুনাহ"—এসবই ছোট ছোট ইয়াজুজ-মাজুজ। এগুলো যদি নিয়ন্ত্রণ না করি, তবে এগুলো আমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে। তাই আসল প্রাচীর বানাতে হবে আমাদের হৃদয়ের ভেতরে—তাওবা, নামাজ, কোরআন আর ধৈর্যের প্রাচীর।

মনে রাখবেন, একদিন আল্লাহর হুকুমে সেই প্রাচীর ভেঙে পড়বে। ইয়াজুজ-মাজুজ বের হবে। কিন্তু আজকের দিনটা আমাদের হাতে। তাই নিজের ভেতরের ইয়াজুজ-মাজুজকে আটকে রাখুন। নইলে কাল হয়তো অনেক দেরি হয়ে যাবে।


শেষকথা

ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর শুধু একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, বরং এটি একটি সতর্কবার্তা। আজকের দিনেই নিজেকে প্রস্তুত করুন। নামাজে দৃঢ় হোন, গুনাহ থেকে দূরে থাকুন, আর অন্যকে ভালোবাসতে শিখুন।

কারণ, যে আল্লাহ ইয়াজুজ-মাজুজকে প্রাচীরের আড়ালে বন্দী করেছেন, তিনিই আমাদের হৃদয়ের অশান্তি, কষ্ট আর ভয়কে বন্দী করতে সক্ষম। তাঁর উপর ভরসা করুন—আপনি হারবেন না, বরং জিতবেন দুনিয়া ও আখেরাতে।



Comments

Popular posts from this blog

দোয়া কবুল হওয়ার ৫টি গোপন সময় – নবীজী (সা.) নিজে বলেছেন!

বাংলাদেশের সেরা ৫টি Microjob Site পেমেন্ট বিকাশে।

আপনার স্ক্রল করা সময়টাকেই যদি টাকা হয়ে আসে?